Free Fire কি বন্ধ হবে পাবজি, ফ্রি ফায়ারসহ ক্ষতিকর অনলাইন গেম বন্ধের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। সংস্থাটি জানিয়েছে, যেসব গেম-অ্যাপ বন্ধ করা সম্ভব নয়, সেগুলোর কার্যালয়কে বন্ধের জন্য চিঠি দেওয়া হবে। Free Fire কি বন্ধ হবে
বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র মঙ্গলবার রাতে প্রথম NEWS বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশ হাতে পেয়েছি। এরপর আজই (মঙ্গলবার) নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, পাবজি-ফ্রি ফায়ার বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিকর অ্যাপের তালিকা করা হচ্ছে। সব কটি হয়তো বন্ধ করা সম্ভব হবে না। সেগুলোর বিষয়ে তাদের কার্যালয়কে চিঠি দেওয়া হবে।
Free Fire কি বন্ধ হবে
এর আগে এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. গত ১৬ আগস্ট কামরুল হোসেন
মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ তিন মাসের জন্য ‘ক্ষতিকারক’ অনলাইন গেমের সব লিঙ্ক বা ইন্টারনেট গেটওয়ে
বন্ধ করার নির্দেশ দেয়।
এছাড়াও, হাইকোর্টের রুল দেশের অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলিকে পাবজি, ফ্রিফায়ার, লাইক, বিগো লাইভ, এর মতো গেম এবং
অ্যাপগুলির সমস্ত ধরণের লিঙ্ক বা ইন্টারনেট গেটওয়ে নিষিদ্ধ বা অপসারণ বা ব্লক করার নির্দেশ দেয় না। তা জানতে চাওয়া হয়।
আদালত অনলাইন গেম-অ্যাপ নিয়মিত তদারকি এবং এ বিষয়ে নির্দেশিকা (গাইডলাইন) তৈরি করতে বিশেষজ্ঞ ও কারিগরি
দক্ষতাসম্পন্ন একটি কমিটি গঠন করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, সে বিষয়েও রুল দিয়েছেন।
গত ২৪ জুন মানবাধিকার সংস্থা ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে রিটটি করা হয়।
বিটিআরসির ভাইস-চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র বলেন, “আমরা নির্দেশনা দিয়েছি। এটি বন্ধ হতে কতক্ষণ লাগবে তা নির্ভর করছে প্রযুক্তিগততার ওপর।”
ইন্টারনেট গেটওয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, কোনো কিছু বন্ধ করতে এখন আর ইন্টারনেট গেটওয়ে প্রতিষ্ঠানের ওপর সরকারকে
নির্ভর করতে হয় না। সরকারের সেই সক্ষমতা রয়েছে।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সুমন আহমেদ গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ক্ষতিকর গেম বন্ধ করা সম্ভব। গেম খুব রিয়েল টাইম
হতে হয়। বন্ধ করা হলে চোরা পথে খেলতে গেলে গতি কম পাওয়া যাবে। এতে কেউ উৎসাহী হবে না।’ তিনি বলেন, অ্যাপ বন্ধ
করা কঠিন। বন্ধ করলেও বিকল্প পথ খোলা থাকে।
বেসরকারি ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এক গবেষণা বলছে, দেশে ২ কোটি ৬০ লাখ
মানুষ বিভিন্ন ডিজিটাল গেম খেলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দিনে দু-তিন ঘণ্টা গেম খেলে কাটানোর প্রবণতা রয়েছে।
Free Fire কি বন্ধ হবে
ফ্রি ফায়ার, পাবজি, ক্লাস অফ ক্ল্যানস, মাইনক্রাফ্ট, কাউন্টার স্ট্রাইক গ্লোবাল অফেন্সেস, কল অফ ডিউটি ওয়ার জোনের মতো
হিংসাত্মক গেমগুলি দেশের তরুণদের মধ্যে বেশি জনপ্রিয়। এই গেমগুলিতে অস্ত্র, গুপ্তহত্যা এবং বোমা হামলার ব্যবহার
জড়িত।
সহিংসতাপূর্ণ গেম মানুষের ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলে, তা নিয়ে আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের দুটি
গবেষণায় দুই ধরনের ফলাফল দেখা যায়। একটিতে দেখা যায়, যাদের মধ্যে সহিংসতাপূর্ণ মনোভাব থাকে, তারা এসব গেম খেলে
সহিংস আচরণ করতে পারে। আরেকটি গবেষণায় বলা হয়, এ ধরনের ভিডিও গেম সাময়িক সময়ের জন্য হলেও সহিংস আচরণ
উসকে দিতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও অনলাইন গেম আসক্তিকে মানসিক সমস্যা হিসেবে গ্রহণ করেছে।